ইউভি প্রিন্টিং (UV Printing) কি? ইউভি প্রিন্টিং এর সুবিধাসমূহ কি কি?
ইউভি প্রিন্টিং-UV Printing হল ডিজিটাল প্রিন্টিং (Digital Printing) এর একটি ধরণ । প্রিন্টিং এর পর কালি শুকানোর ক্ষেত্রে আল্ট্রা ভায়োলেট লাইট (Ultra Violet Light) ব্যবহার করা হয়। প্রিন্ট কমান্ড দেয়ার পর প্রিন্টারের হেডগুলো থেকে কালি প্রিন্ট মাধ্যম (কাগজ, পিভিসি, কাঠ, লেদার ইত্যাদি) এর উপড় পড়ার সাথে সাথেই শুকানোর প্রকৃয়াটা শুরু হয়। প্রথাগত প্রিন্টিং এ কালি শুকানোর প্রক্রিয়াটা একটু সময় সাপেক্ষ। কালিটা প্রিন্টিং মিডিয়া যেমন কাগজে পড়ার পর কালিটা আস্তে আস্তে কাগজ শুষণ করে নেয় আর পানিটা বা অন্যান্য উপাদানগুলো বাতাসে জলীয় বাষ্প হয়ে উড়ে যায়। ইউভি প্রিন্টিং এর সাথে প্রথাগত প্রিন্টিং (অফসেট প্রিন্টিং) এর মূল পার্থক্যটা এখানেই।
ইউভি প্রিন্টার বর্তমানে অনেক ইন্ডাস্ট্রীতেই ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন: কর্পোরেট গিফট আইটেম প্রিন্টিং কারখানা, মোবাইল কাভার প্রিন্টিং কারখানা, খেলনা প্রস্তুত করণ কারখানা, লেদার পণ্য প্রস্তত করণ কারখানা, সিরামিক কারখানা। এ প্রিন্টার দিয়ে প্রিন্টিং করার ক্ষেত্রে যত ইচ্ছা তত কালার ব্যবহার করা যায়। আগে স্ক্রীণ প্রিন্টিং প্রযুক্তিতে বেশি কালারে প্রিন্ট করতে অনেক কষ্ট হত, সময় লাগত এবং নিখুঁতও হত না। আর বর্তমানে ইউভি প্রিন্টারের মাধ্যমে যে কোন কালারই প্রিন্ট করা যায়। আরও মজার ব্যপার হল যে কোন ধরণের বস্তুর উপড়ই ইউভি প্রিন্ট করা যায়। যেমন: মোবাইল কাভার (Mobile Cover), কলম (Pen), কাঠ (Wood), লোহা, গ্লাস, এক্রেলিক (Acrylic), ক্রিস্টাল (Cristal) ইত্যাদি। আর প্রিন্টিং কোয়ালিটির কথা বললে এক কথায় অসাধারণ, অত্যধিক রেজুলিউশন এর এবং স্ক্র্যাচ ও পানি নিরোধী।
ইউভি প্রিন্টিং-UV Printing এর সুবিধাসমূহ:
১. কালি প্রিন্ট হওয়ার সাথে সাথেই শুকিয়ে যায়।
২. নানা ধরনের বস্তুতে প্রিন্ট করা যায়। যেমন: কাগজ, চামরা, কাঠ, পিভিসি, এক্রেলিক, রাবার, প্লাস্টিক ইত্যাদি।
৩. এ প্রকৃয়ায় প্রিন্ট করা কালিতে সহজে স্ক্রেচ পড়ে না, ভাজ পরে না কিংবা রং ফেইড হয়ে যায় না।
৪. প্রিন্ট অনেক বেশি প্রাণবন্ত হয় কারণ কালি খুব দ্রুতই শুকিয়ে যায় ফলে কালি সাবস্টেইটটিতে ছড়িয়ে পড়তে পারেনা।
৫. এই পদ্ধতিতে প্রিন্টিং করলে কালি থেকে কোন ক্ষতিকর কিছু বাতাসে ছড়িয়ে পড়তে পারেনা। কারণ এ কালি সলভেন্ট প্রকৃতির নয়। তাই বলা যায় ইউভি প্রিন্টিং পদ্ধতি পরিবেশের জন্যও ভাল।
৬. স্বচ্ছ বস্তুর উপড় প্রিন্টিং করার ক্ষেত্রে ইউভি প্রিন্টিং খুবই কার্যকরী।
৭. ক্লিয়ার কালি দিয়ে প্রিন্ট এর কিছু কিছু অংশে টেক্সার যুক্ত করার সুযোগ।
৮. ইউভি প্রিন্টার দিয়ে ৬ ইঞ্চি উচ্চতা পর্যন্ত যেকোন বস্তুর উপড় প্রিন্ট করা যায়।
যোগাযোগ করুন
আইডি কার্ড , কলম, পেনড্রাইভ, মোবাইল কাভার, নোটবুক কাভার ও অন্যান্য গিফট আইটেম ইউভি প্রিন্টি করাতে চাইলে যোগাযোগ করুন: এপিয়ান প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ” এর সাথে।
১৮৭৫ সালে রবার্ট বার্কলে কতৃক প্রথম রোটারী অফসেট লিথোগ্রাফিক প্রিন্টিং প্রেস তৈরী হয় ইংল্যান্ডে
অফসেট প্রিন্টিং এর সুবিধা সমূহ:
১. ধারাবাহিকভাবে উচ্চমান সম্পন্ন ছবি প্রিন্ট করা যায়। লেটার প্রেসে প্রিন্টিং (Letter Press Printing) এর তুলনায় অনেক সহজভাবে অনেক স্পস্ট ও নিঁখুত ছবি প্রিন্ট করা যায় অফসেট প্রেসে। এর কারণ রাবার ব্লাঙ্কেট এর সংযোজন। রাবার ব্লাঙ্কেটটি প্রিন্ট মাধ্যমটির উপড়িভাগে খুব ভালভাবে লাগে।
২. দ্রুত ও সহজভাবে প্রিন্টিং প্লেট প্রস্তত করা যায়।
৩. প্রিন্টিং প্লেটটি দীর্ঘসময় পর্যন্ত টিকে থাকে লিথো প্রেস এর তুলনায়। কারণ প্রিন্টিং সাফেস এর সাথে প্লেটটির সরাসরি কোন সংযোগ হয় না।
৪. বানিজ্যিক ও উচ্চ গুণগতমানসম্পন্ন প্রিন্টিংএর ক্ষেত্রে অফসেট প্রিন্টিং হল সবচেয় সস্থা প্রিন্টিং পদ্ধতি।
৫.প্রিন্টিং এর সময় কি পরিমান কালি রোলারে যাবে তা কিছু চাবির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করা যায়। তবে বর্তমানে এই চাবিগুলো আরও নিখুঁতভাবে নিয়ন্ত্রন করা যায় ইলেক্ট্রনিক নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে।
অফসেট প্রিন্টিং এর অসুবিধা সমূহ:
১. ছবির মান রটোগ্রাভিয়ার প্রিন্টিং এর তুলনায় কিছুটা খারাপ আসে।
২. ভালভাবে প্লেট বানাতে না পারলে প্লেটের ছবিহীন যায়গাগুলোতেও কালি চলে আসে ফলে প্রিন্ট কোয়ালিটি খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
৩. অল্প পরিমান ছাপার ক্ষেত্রে সময় ও খরচ দুটোই বেশি লাগে। ফলস্বরুপ ডিজিটাল প্রিন্টিং বর্তমান সময়য়ে স্বল্প পরিমান ছাপার ক্ষেত্রে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।